দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে দুর্দান্ত সকালের পর বিকেলটাও ভারতের পক্ষেই যাচ্ছিল। টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নামা স্বাগতিকদের তারা মাত্র ৫৫ রানেই অলআউট করে দেয়। ৬ উইকেট পাওয়া মোহাম্মদ সিরাজের আগুনে পেসের পর ব্যাট হাতে লিডও তুলে নিয়েছিল ভারত। কিন্তু এরপরই তারা লজ্জার বিশ্বরেকর্ড গড়েছে। ‘শূন্য’ রানে অর্থাৎ কোনো রান না করে নিজেদের শেষ ৬টি উইকেট হারিয়েছে সফরকারীরা। এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।
চা-বিরতির পর একপর্যায়ে ভারতের রান ছিল ৪ উইকেটে ১৫৩। তারপর মাত্র ১১ বলের ব্যবধানে ভারতের বাকি ৬টি উইকেট পড়ে যায়। ১৫৩ রানেই অলআউট হয় তারা।
রেকর্ডটা হয়েছে এই সময়ে। শেষ ৬ উইকেট হারানোর বিপরীতে স্কোর বোর্ডে কোনো রানই যোগ করতে পারেননি ভারতীয় ব্যাটাররা। অর্থাৎ ইনিংসের ওই পর্যায়ে তারা ১১টি বল খেলেছেন, বিপরীতে রানের খাতা শূন্য।
তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়া সেই মিছিলে ছিলেন বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুলের মতো তারকা ব্যাটসম্যানও। যদিও ভারতের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৪৬ রান এসেছে কোহলির ব্যাট থেকেই।
দ্বিতীয় টেস্টের মাত্র প্রথমদিন চলছে। এরই মাঝে ২০ উইকেট হারিয়েছে দুই দল। কিন্তু তখনও যে দিনের আরও কমপক্ষে ২৫ ওভারের মতো খেলা বাকি। ফলে প্রোটিয়ারা ফের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিংয়ে নেমেছে। প্রথম ইনিংসে তাদের নেওয়া ৫৫ রান টপকে ভারত থেমেছে ১৫৩ রানে। ফলে সফরকারীদের লিড ৯৮ রানের। সিরিজের প্রথম টেস্টেও ছিল বাড়তি বাউন্স ও সুইংয়ের খতরনাক পিচ। যেখানে ভারতীয়দের নাজেহাল করে বড় ব্যবধানে জিতেছিল প্রোটিয়ারা। দ্বিতীয় টেস্টেও প্রায় একই দৃশ্য মঞ্চস্থ হচ্ছে।
এর আগে প্রথম ইনিংসে প্রোটিয়াদের ব্যাটিং বিপর্যয়ে মূল ভূমিকা ছিল সিরাজের। মাত্র ১৫ রান খরচায় তিনি একাই নিয়েছেন ৬ উইকেট। এ নিয়ে সিরাজ তিনবার টেস্টের এক ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেট পেয়েছেন। সিরাজ ছাড়াও ২টি করে উইকেট নিয়েছেন জাসপ্রিত বুমরা এবং মুকেশ কুমার। বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সবচেয়ে বেশি রান এসেছে উইকেটরক্ষক ভেরেইনের ব্যাটে। ১৫ রান করেন তিনি। ভেরেইনে এবং বেডিংহ্যাম ছাড়া আর কোনো ব্যাটারই দু’অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ভারতীয়দের শেষ চার ব্যাটসম্যানই শূন্য রানে আউট হয়েছেন। সবমিলিয়ে ডাক খেয়েছেন ৫ ব্যাটসম্যান। কোহলির সর্বোচ্চ ৪৬ ছাড়া ভারতের পক্ষে অধিনায়ক রোহিত শর্মা ৩৯ এবং শুভমান গিল ৩৬ রান করেন। এছাড়া সফরকারীদের আর কোনো ব্যাটসম্যানই ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘর।
প্রোটিয়াদের হয়ে সমান ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন লুঙ্গি এনগিডি, কাগিসো রাবাদা ও নান্দ্রে বার্গার।