মোহাম্মদ আমির আর পাকিস্তান জাতীয় দলের লুকোচুরি চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে এই তারকা পেসার অনাকাঙ্ক্ষিত অবসরের ঘোষণা দেন। এরপর বেশ কয়েকবার তার জাতীয় দলে ফেরার গুঞ্জন উঠলেও, সেসব আলোর মুখ দেখেনি। এবার আবুধাবির আইএল টি-টোয়েন্টিতে আমির ও শাহিন আফ্রিদি একসঙ্গে খেলার সুবাদে আবারও সেই আলোচনা উঠেছে। শোনা যাচ্ছে– আমিরকে ফেরানোর মিশনে নেমেছেন শাহিন!
টি-টোয়েন্টিতে স্বীকৃত ওই ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরে এই দুই তারকা পেসার খেলছেন ডেজার্ট ভাইপার্সের হয়ে। অন্তত পাঁচ বছর পর শাহিন-আমির একসঙ্গে একদলের হয়ে খেলেছেন। চলমান টুর্নামেন্টটিতে জুটি বেধে প্রতিপক্ষ শিবিরে ত্রাসও ছড়াতে দেখা যায় তাদের। এরই মাঝে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স–এ (সাবেক টুইটার) শাহিনের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সায়া কর্পোরেশন। সেখানেই আমিরের জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে জানতে চাওয়া হয় পাকিস্তানের এই টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের কাছে।
এ নিয়ে আমিরের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান শাহিন আফ্রিদি, ‘আমি মোহাম্মদ আমিরের সঙ্গে কথা বলব, জানতে চাইব তিনি ফের পাকিস্তান জাতীয় দলে ফিরতে চান কি না। প্রায় পাঁচ বছর পর আমি তার সঙ্গে বল করছি। তার সঙ্গে বল করার অনুভূতি অসাধারণ, আমাদের জুটিও দুর্দান্ত।’ এখন নতুন করে আমিরের জাতীয় দলে ফেরার দরজা খুলে কি না সেটাই দেখার বিষয়!
২০২০ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধান কোচ মিসবাহ-উল-হক ও বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনিসের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেন আমির। তখন তার দাবি ছিল– কোচরা তার প্রতি অবিচার করেছে। সম্প্রতি এই পেসারের কাছে জাতীয় দলে ফেরার আগ্রহ আছে কি না জানতে চাওয়া হলে বলেন যে, তার চিন্তায় পরিবর্তন এসেছে। তিনি বর্তমানে অন্য কিছুকে প্রাধান্য দিতে চান। ফলে তখন তার দলে ফেরার গুঞ্জন থেমে যায়।
বাঁ-হাতি এই পেসারের সঙ্গে কথা বলেছেন পাকিস্তানের বর্তমান টিম ডিরেক্টর মোহাম্মদ হাফিজও। যা নিয়ে দেশটির সাবেক এই অধিনায়ক জানিয়েছিলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমিরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, যদি পাকিস্তান দলে আবারও খেলতে চাও তাহলে ঘরোয়া ক্রিকেট এবং পারফরম্যান্স দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করো। অন্য খেলোয়াড়দের মতো তাকেও সমান সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করছিলাম। কিন্তু সে জানাল পাকিস্তানের হয়ে আর খেলতে চায় না। আমাকে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক লিগগুলোয় সে তার ভবিষ্যৎ দেখছে।’
আমির পাকিস্তানের হয়ে সব মিলিয়ে ১৪৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। জাতীয় দল থেকে অবসর নিলেও ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আর সেটাকেই পরবর্তী ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চান বলে জানান ৩১ বছর বয়সী এই পেসার। আইপিএল বাদে তিনি বিশ্বের প্রায় সব লিগেই খেলছেন। ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার কারণে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের ওপর নিষেধাজ্ঞা না দিলে হয়তো আইপিএলেও দেখা যেত তাকে। তবে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেলে তার আইপিএলে খেলার দরজাও খুলতে পারে বলে জানিয়েছিল দেশটির সংবাদমাধ্যম।